ডেটা বিশ্লেষণটি তৈরি করেছেন জাহিদুল হক চন্দন। ডেটাফুল আয়োজিত ডেটাভিত্তিক জলবায়ু প্রতিবেদন প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার পর তিনি এটি তৈরি করেন। বিশ্লেষণটি রাইজিংবিডির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ হয়েছ।
মানিকগঞ্জে পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতি, গাজীখালীসহ একাধিক নদী এবং খাল-বিল রয়েছে। সেকারণে জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা অনেক বেশি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত বাংলাদেশ ডিজাস্টার-রিলেটেড স্ট্যাটিস্টিকস ২০২১ (বিডিআরএস) এর ডেটায় দেখা যায়, মানিকগঞ্জে ছয় বছরে (২০১৫-২০২০) বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ১২০টি পরিবার। এই সংখ্যা মানিকগঞ্জে বিবিএসের জরিপের আওতায় থাকা পরিবারের ৬০ শতাংশ।
বিডিআরএসের আওতায় দেশে ছয় বছরে (২০১৫-২০২০) প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৫ লাখের বেশি পরিবারের ওপর জরিপ চালানো হয়। এরমধ্যে মানিকগঞ্জে জরিপের আওতায় আসে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪২৭টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।
বন্যার পর মানিকগঞ্জে নদীভাঙনের শিকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি পরিবার। এই সময় নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার ২৪ হাজার ৮৪৯টি পরিবার, যা মানিকগঞ্জে জরিপে থাকা পরিবারের ১৩ শতাংশ। এছাড়া বজ্রঝড়ের কবলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানিকগঞ্জের প্রায় ১৯ হাজার পরিবার (১০%)।
দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মুজিব মুসলিমী বলেন, ‘প্রতি বছর এ অঞ্চলে বন্যা, নদীভাঙন লেগেই থাকে। এ ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হয়।’
জরিপের ডেটা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মানিকগঞ্জে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি।
মানিকগঞ্জে প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই ছয় বছরে (২০১৫-২০২০) ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ২৪১ একর। এই পরিমাণ মানিকগঞ্জে জরিপের আওতায় থাকা মোট ক্ষতিগ্রস্ত জমির ৬০ শতাংশ।
ডেটাফুল বলছে, (https://dataful.xyz/climate/home) জরিপের ডেটা অনুযায়ী, এই ফসলি জমির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা।
দুর্যোগ প্রসঙ্গে কথা হলে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।’